ব্রণ বা পিম্পল কেন হয়?

ত্বকের শত্রু হলো ব্রণ। এই শত্রু আপনার ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য একাই একশো! প্রথমে ছোট একটি দানার মতো জন্ম নিয়ে এরপর বড় হয়, সেখানে জমতে পারে পুঁজও। একে ইংরেজিতে বলে অ্যাকনে বা পিম্পল, বাংলা বলা হয় ব্রণ। ব্রণ হলে তা আপনার সৌন্দর্য কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নষ্ট করে আত্মবিশ্বাসও। 

বয়ঃসন্ধির সময়ে এই সমস্যা বেশি হয়। তবে শুধু এসময়েই নয়, বরং যেকোনো বয়সেই ত্বকে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। হরমোনাল পরিবর্তনের পাশাপাশি অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক, জিনগত কারণ, ইনফেকশন ইত্যাদি নানা কারণে হতে পারে ব্রণের সমস্যা। ব্রণ হলে আমরা অজান্তেই এমনকিছু ভুল করে ফেলি, যেগুলো হতে পারে ভোগান্তির কারণ। তখন সমস্যা না কমে আরও বাড়তে পারে।

জেনে নিন ব্রণ কেন হয় এবং হলে কি কি করতে হবে বা কোন ভুলগুলো করা যাবে না। এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ডাঃ পারসা রহমান।

★ত্বকের ফলিকল বা ছিদ্রের ভেতরে সিবাসিয়াস গ্রন্থি গুলো সিবাম ( তৈলাক্ত পদার্থ) তৈরি করে। অতিরিক্ত সিবাম ত্বকের মৃত কোষের সাথে মিলে বা কেরাটিনের সাথে যুক্ত হয়ে প্লাগ তৈরি করে ফলিকল বা ছিদ্র গুলো বন্ধ করে দেয়।

➤ব্রণ কাদের বেশি হয় বা ঝুঁকি বেশি?

১।বয়ঃসন্ধি সময়ে ব্রণ হওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে। কারন এই সময় শারীরিক ও মানুষিক অনেক পরিবর্তন আসে। সাথে সাথে অনেক রকম হরমোনাল পরিবর্তন হয়।

২।জিনগত (বাবা অথবা মা যে কারও কৈশরে ব্রণ হওয়ার প্রবনতা) অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করা, ভিটামিন মিনারেলের অভাব, ইত্যাদি ব্রণ সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

৩।মানসিক চাপ, অপর্যাপ্ত ঘুম
অ্যালকোলে আসক্ত, ধুমপান, অধিক মাত্রায় মিষ্টি জাতীয় খাবার ব্রণ সৃষ্টি করে।

৪।প্রসাধনী: অতিরিক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার বা সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করা বা প্রসাধনী ব্যবহারের পরে ত্বক ঠিক করে পরিষ্কার না করায় ত্বকে ব্রণ হতে পারে।

৫। দুষিত পরিবেশ, ত্বকে সান প্রটেকশন না নিয়ে তীব্র রোদে প্রতিদিন কাজ করা, অতিরিক্ত ঘামের থেকেও
ব্রণ হতে পারে।

৬। বিভিন্ন ঔষধ থেকেও হওয়ার সম্ভবনা আছে — স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ, হরমোন থেরাপি ইত্যাদি।

➤প্রতিরোধের উপায় কি–
১। সবচেয়ে সহজ উপায় – প্রতিদিন ঘরে থাকা অবস্থায় বা বাইরে থেকে এসে পরিষ্কার পানির (কুসুম গরম পানি হতে পারে) সাথে তেল কন্ট্রোল করে এমন ফেস ওয়াস দিয়ে ২-৩ বার পরিষ্কার করা।

২। কখনোই মুখে পিম্পল বা ব্লাক/হোয়াইট হেডস হলে হাত দিয়ে চাপাচাপি করা উচিত না। বার বার মুখে হাত দিলে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৩।খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন – চিনি, চকলেট, অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। অন্য দিকে সবুজ শাক সবজি, গাজর, ভিটামিন “এ”, “সি” সমৃদ্ধ খাবার, টাটকা ফলমূল খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পানের বিকল্প নেই।

৪। তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবেনা। প্রতিটা পণ্যে ‘নন-কমেডোজেনিক’ লেখা আছে কিনা দেখে নিতে হবে।
অবশ্যই মুখে সান ব্লক ব্যবহার করতে হবে। আর যেকোনো প্রসাধনী ব্যবহারের পরে সেটা ভালো ভাবে মুখ থেকে পরিষ্কার করতে হবে।

৫। ত্রিশ থেকে চল্লিশ বছর বয়স্ক নারীদের মধ্যেও অনেক সময় ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। এই বয়সেও হরমোনের পরিবর্তন হতে থাকে, ভিটামিনের অভার হতে থাকে, এই সমস্যা একজন ভালো বিশেষজ্ঞের পরামর্শের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।

ত্বক মানুষের শরীরের সব চেয়ে বড় অংশ। তাই নিয়ম মেনে যত্ন নেওয়া উচিত।